রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য বৈঠক ডাকলো যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশের অগ্রাধিকার প্রত্যাবাসন
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে নিজেদের জন্মভূমি ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য টেকসই মানবিক সহায়তা বিষয়ে বৈঠকের আয়োজন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) ওই বৈঠকে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ, আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহ, ভারত, জাপানসহ প্রায় অর্ধশত দেশ ও সংস্থা অনলাইনে অংশ নেবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গণমাধ্যমকে জানান, ‘মানবিক সহায়তার জন্য পৃথিবীর সংশ্লিষ্ট দেশ ও সংস্থার অবদানকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার তাদের প্রত্যাবাসন। একইসঙ্গে আমরা এই সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য আশিয়ান ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী ভূমিকা আশা করছি ।’
মিয়ানমার সরকারের ওপর রোহিঙ্গাদের আস্থার অভাব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনও বেসামরিক উদ্যোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পরে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হলে একটি আস্থার জায়গা তৈরি হবে। আমরা রোহিঙ্গাদের স্ব-প্রণোদিত, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন চাই। এজন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’
প্রত্যাবাসনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সরকার প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত তিনটি চুক্তি করেছে এবং এগুলো বাস্তবায়নের জন্য যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু এই গ্রুপের শেষ বৈঠক হয়েছে গত বছরের মাঝামাঝি। এরপর বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও মিয়ানমারের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে বৈঠক করা যাচ্ছে না।’
যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের মাধ্যমে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গার তালিকা যাচাই বাছাই করার জন্য দিলেও এ পর্যন্ত মাত্র ১০ হাজারের যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে আগস্ট মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা শুরু করলে ৭ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রস্তুতি সত্ত্বেও গত কয়েক বছর চেষ্টা করেও এখনও কোনো রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি।
এফএম/এমএফও